বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ


Breaking

Saturday, October 11, 2025

পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীরা প্রায়ই শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকেন: সন্তু লারমা

 

পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম নারীরা প্রায়ই শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন-নিষ্পেষণের শিকার হয়ে থাকেন বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা। গতকাল শুক্রবার সকালে রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির ১৩তম কেন্দ্রীয় সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। রাঙামাটির আশিকা কনভেনশন হলে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সন্তু লারমা বলেন, ‘বর্তমানে অধিকাংশ ছাত্রী উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন, উচ্চতর প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি লাভ করছেন। কিন্তু সমাজে নারীদের অবস্থান সম্পর্কে তাঁদের যথাযথ অনুধাবন দেখা যায় না। বরং আত্মমুখিতায় জর্জরিত চিন্তার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়।’

সন্তু লারমা আরও বলেন, ‘জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে বৃহত্তর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে তরুণ ছাত্র-যুবসমাজ, নারীসমাজ তথা সবাইকে অধিকতরভাবে আন্দোলনে সামিল হতে হবে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে নানা ধরনের সুবিধাবাদিতা, পশ্চাৎপদ চিন্তা জেঁকে বসেছে। সেসব কিছুকে পেছনে ফেলে বৃহত্তর আন্দোলনকে সুসংগঠিত হতে হবে।’

নারীসমাজকে বৃহত্তর আন্দোলনে শামিল করার আহ্বান জানিয়ে সন্তু লারমা বলেন, শাসকগোষ্ঠী দমন-পীড়ন, মিথ্যা মামলা দিয়ে পার্টিকে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল। সে সময় মহিলা সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা কিছুটা ব্যাহত হলেও থেমে থাকেনি। পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি সদস্যদের জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার। তিনি বলেন, ‘জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন, নারীদের নিরাপত্তা বিপন্ন। নারীরা সমাজের অর্ধেক অংশ, এই অর্ধেক অংশকে পেছনে রেখে সমাজ এগিয়ে যেতে পারে না। জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নারীসমাজের ভূমিকা রাখতে হবে, না হলে আন্দোলন সফল হবে না।’

পার্বত্য চুক্তিবিরোধী একটি দল শাসকগোষ্ঠীর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে অভিযোগ তুলে ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘শাসকগোষ্ঠীর অবস্থা কী, তা বুঝে আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে। আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় জুম্ম জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করতে হবে।’

সম্মেলনের উদ্বোধক ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সাবেক সভাপতি মাধবীলতা চাকমা। সঞ্চালনা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক শ্যামা চাকমা। সম্মেলনে বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিতা চাকমা।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে মনি চাকমাকে সভাপতি, আশিকা চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক, সুবিনা চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির ৩৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।

No comments:

Post a Comment

"
"